প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের নীতির সমাপ্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। শুক্রবার বাহরাইনে অনুষ্ঠিত ‘মানামা ডায়ালগ’ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনের আগে তিনি এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা গবেষণা সংস্থা এই সম্মেলনের আয়োজন করে। খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের।

তুলসী গ্যাবার্ডের এ মন্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে দেওয়া বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণ। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সেই লক্ষ্য বদলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

ওয়াশিংটনের পুরোনো চিন্তাধারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে পিছিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন গ্যাবার্ড। তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি সরকার পরিবর্তন বা জাতি গঠনের এক ব্যর্থ চক্রে আটকে ছিল। এটি ছিল এমন এক “সবার জন্য প্রযোজ্য” নীতি, যেখানে অন্য দেশের সরকার উৎখাতের চেষ্টা, নিজেদের শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া এবং অপর্যাপ্ত বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া হয়েছে, যার ফলে মিত্রের চেয়ে শত্রুই বেশি তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই ব্যর্থ নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে, অসংখ্য প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বৃহত্তর নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে, যার ফলেই আইএসআইএসসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে।

গ্যাবার্ডের এই বিশ্লেষণ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যে বৈশ্বিক যুদ্ধ শুরু করেছিল, তার পর্যালোচনার সঙ্গে মিলে যায়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিল, যা বাইডেন প্রশাসনের সময় ২০২১ সালে বিশৃঙ্খলভাবে শেষ হয়। এছাড়া ট্রাম্প সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাকে স্বীকৃতি দেন, যিনি একসময় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বন্দী ছিলেন এবং আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

তবে মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। গ্যাবার্ড বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো ভঙ্গুর, অন্যদিকে ইরান সম্প্রতি তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে তিনি ট্রাম্পের দক্ষিণ আমেরিকায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, মাদকবাহী জাহাজে হামলা এবং ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান পরিচালনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।