ব্রোকলি ক্রুসিফেরাস পরিবারের অন্যতম সদস্য, যার মধ্যে রয়েছে কেল, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রাসেলস স্প্রাউট। সবুজ রঙের ফুলকপির মতো দেখতে এই সবজিটি “সুপারফুড” হিসেবে পরিচিত। এতে রয়েছে জৈব সক্রিয় যৌগ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খাদ্যতালিকাগত ফাইবার, যা শরীরের জন্য অসংখ্য উপকার বয়ে আনে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রোকলি খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা—
🔹 প্রদাহ কমায়
ব্রোকলিতে থাকা কেম্পফেরল ও সালফোরাফেনের মতো শক্তিশালী প্রদাহ-বিরোধী যৌগ দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। নিয়মিত ব্রোকলি খেলে শরীরে প্রদাহজনক উপাদানের মাত্রা কমে, যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
🔹 ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
ব্রোকলি ও অন্যান্য ক্রুসিফেরাস সবজিতে থাকা জৈব সক্রিয় যৌগ কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্রোকলি খাওয়ায় স্তন, প্রোস্টেট, কোলোরেক্টাল, গ্যাস্ট্রিক, কিডনি ও মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
বিশেষ করে সালফোরাফেন যৌগ ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বাধা দিতে পারে। যদিও আরও মানব গবেষণা প্রয়োজন, তবুও ব্রোকলিকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ-বিরোধী গুণের কারণে ক্যান্সার প্রতিরোধী খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
🔹 হৃদরোগ দূরে রাখে
ব্রোকলি ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমায় এবং ভালো এইচডিএল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
কিছু গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ব্রোকলি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা ও হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
🔹 রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে
ব্রোকলির জৈব সক্রিয় যৌগ ও ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। ফাইবার হজমের গতি কমিয়ে খাবারের পর রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
🔹 হজম ভালো রাখে
ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ব্রোকলি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। এটি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায় এবং প্রদাহ কমায়। নিয়মিত ব্রোকলি খেলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের গঠন ইতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হয়, ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া হ্রাস পায়।
👉 পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রোকলিকে তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে — স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অংশ হিসেবে।