
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ, প্রযুক্তিগত তদন্ত ও প্রচলিত বিভিন্ন উপায়ে তাকে শনাক্ত করার কাজ চলছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হলেও পুলিশ পৌঁছানোর আগেই অবস্থান পাল্টে ফেলছেন তিনি।
এ ঘটনায় নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন। তিনি ওই গৃহকর্মীকেই হত্যার জন্য সন্দেহ করেছেন। আয়েশা নামের পরিচয় দেওয়া এই তরুণী দাবি করেছিলেন, তিনি মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে থাকেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা জানান, সন্দেহভাজন গৃহকর্মীকে মোটামুটিভাবে শনাক্ত করা গেছে, এবং তাকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত–সংশ্লিষ্টরা জানান, আয়েশা গ্রেপ্তার এড়াতে বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছেন এবং নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। প্রাথমিক ধারণা, মূল্যবান সামগ্রী চুরির উদ্দেশ্যেই তিনি গৃহকর্মী সেজে বাসায় ঢুকেছিলেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়:
চার দিন আগে আয়েশা খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে ওই বাসায় কাজ শুরু করেন। সোমবার সকালে আজিজুল ইসলাম কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পর স্ত্রী–কন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তিনি বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম নিয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। গলার ডান পাশে কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়ে মেইন গেটের পাশে পড়ে ছিল। পরিছন্নকর্মী আশিকের সাহায্যে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ রয়েছে, বাসা থেকে মেয়ের মোবাইল, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী খোয়া গেছে।
এদিকে, নিহত মা–মেয়েকে মঙ্গলবার নাটোরে দাফন করা হয়েছে। দুপুরে মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা শেষবারের মতো তাদের দেখতে ছুটে আসেন। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। স্বজনেরা হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি
Leave a Reply