ক্যান্সার প্রতিরোধ সহজ নয়, তবে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এনে ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। হার্ভার্ড-প্রশিক্ষিত গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ড. সৌরভ শেঠি সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এমন ছয়টি খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছেন, যেগুলো নিয়মিত খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বেকন, সসেজ, হ্যাম, সালামির মতো প্রক্রিয়াজাত মাংসজাত খাবারকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ‘গ্রুপ ১ কার্সিনোজেন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এতে থাকা রাসায়নিক পদার্থ কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
কোল্ড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস বা মিষ্টি জুসে থাকা অতিরিক্ত চিনি ইনসুলিন মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। বিকল্প হিসেবে পানি, চিনি ছাড়া চা বা প্রাকৃতিক ফলের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন ড. শেঠি।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপসের মতো উচ্চ তাপে ভাজা খাবারে অ্যাক্রিলামাইড নামক একটি ক্ষতিকর যৌগ তৈরি হয়, যা প্রাণীদের মধ্যে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়। এই খাবার দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ক্যান্সারের ভূমি তৈরি করে।
গ্রিল বা বারবিকিউ করা মাংসে তৈরি হয় HCA ও PAH নামক যৌগ, যেগুলো ডিএনএ ক্ষতি করে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এসব খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি।
অ্যালকোহল শরীরে অ্যাসিটালডিহাইড তৈরি করে, যা ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্তন, লিভার ও কোলনের মতো বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সারের পেছনে এটি দায়ী। এমনকি মাঝারি মাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ করলেও ঝুঁকি থেকে যায়।
ইনস্ট্যান্ট নুডলস, প্যাকেটজাত খাবার, মিষ্টি সিরিয়াল বা প্রস্তুত বেকড পণ্যে থাকে ট্রান্স ফ্যাট, পরিশোধিত চিনি ও কৃত্রিম উপাদান। এগুলো ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি স্তন ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।
এই খাবারগুলো একবার খাওয়াই ক্যান্সার তৈরি করে না, তবে নিয়মিত ও অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ক্যান্সারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনই হতে পারে ক্যান্সার প্রতিরোধের কার্যকর উপায়।