জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা ও লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক আট আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনাল–২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
সকালে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে আট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন— ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল হোসেন এবং কনস্টেবল মুকুল।
বিচার শুরুতে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে ট্রাইব্যুনাল। পরে উপস্থিত আসামিদের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। তবে পলাতক সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ৭ আগস্ট অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম আদালতে জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর লাশগুলো পুলিশভ্যানে তুলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় একজন জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়।
এর আগে, ১৬ জুলাই পলাতক আট আসামিকে গ্রেপ্তার ও ট্রাইব্যুনালে হাজিরের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল–২। ২ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন প্রসিকিউশন। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় ৩১৩ পৃষ্ঠার তথ্য, ৬২ জন সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ এবং দুটি পেনড্রাইভ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পোড়ানো হয়। নৃশংস এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।