তিন দফা দাবিতে যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হামলার সময় ও স্থান
বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড়ে পৌঁছালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পদযাত্রাটি প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে, পরে মৎস্য ভবনেও বাধা দেয় পুলিশ। কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে পৌঁছানোর পর অতর্কিতে লাঠিপেটা, টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ।
আহতদের পরিচয়
পুলিশের হামলায় আহতদের মধ্যে আছেন:
ড. মো. রইছ উদ্দিন – জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক
মাহাতাব হোসেন লিমন – সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক
সোহান ফরাজি – ঢাকা ট্রিবিউনের জবি প্রতিনিধি
মেহেদী হাসান – দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য
অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই অবস্থান করবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক অভিযোগ করেন, “আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। সহকারী প্রক্টরকেও আঘাত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে সরবো না।”
পুলিশের অবস্থান
রমনা জোনের ডিসি মাসুদুল আলম জানান, “হামলায় পুলিশের ২০ জন সদস্যও আহত হয়েছেন। যমুনার সামনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
তিন দফা দাবি
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো:
২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।