যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাসের ‘ইতিবাচক মনোভাব’কে ভালো খবর বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী সপ্তাহেই গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমি এখনও আলোচনা কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানি না। তবে হামাসের ইতিবাচক সাড়া একটি ভালো পদক্ষেপ।”
এর আগে হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে তারা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং আলোচনা দ্রুত শুরু করতে প্রস্তুত।
ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, হামাস প্রস্তাবের মূল কাঠামোর সঙ্গে একমত হলেও কয়েকটি সংশোধনী চেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ হলেও ইসরায়েলের পুনঃআক্রমণ না করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লিখিত নিশ্চয়তা।
নতুন প্রস্তাবে জীবিত অন্তত ১০ জন এবং মৃত ১৮ জন জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের মাধ্যমে গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
হামাস, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, শুধুমাত্র জাতিসংঘ এবং নিরপেক্ষ অংশীদার সংস্থার মাধ্যমেই ত্রাণ বিতরণ করা উচিত।
গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাবেও হামাস পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। তারা চায়, মার্চে যুদ্ধবিরতি ভাঙার আগে যেসব অবস্থানে ইসরায়েলি সেনারা ছিল, অবিলম্বে তাদের সেখানে ফিরে যেতে হবে।
ট্রাম্প এর আগেও জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তে সম্মত হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার বলে এসেছেন, হামাসের সামরিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ধ্বংস এবং সব জিম্মির মুক্তি ছাড়া যুদ্ধবিরতির কোনো প্রশ্নই নেই।
বর্তমান পরিস্থিতিতে হামাসের প্রতিক্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কিছুটা আশার সৃষ্টি করেছে। তবে চূড়ান্ত সমাধান এখনও অনিশ্চিত। আলোচনার অগ্রগতি এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর ভূমিকার ওপর।