সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার (৭১) নিখোঁজের একদিন পর মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে নৌ পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ছবি দেখে পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করতে মুন্সিগঞ্জে যান। রাত পৌনে নয়টায় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে ছোট ভাই চিররঞ্জন সরকার ও ছেলে ঋত সরকার লাশ শনাক্ত করেন।
দৈনিক আজকের পত্রিকা-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিকেল পাঁচটার মধ্যে ফেরার কথা বলে বের হলেও আর বাসায় ফেরেননি। ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে পরিবার রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
লাশ দেখে ছেলে ঋত সরকার জানান, “বাবার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল, কিছু আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। আসলে কী কারণে এমন হয়েছে, আমরা বুঝতে চাই। যাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাঁদের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার হতে হবে।” তিনি আরও বলেন, তার বাবা সব সময় শান্ত মানুষ ছিলেন, হতাশাগ্রস্ত ছিলেন কি না নিশ্চিত নন।
ছোট ভাই চিররঞ্জন সরকার বলেন, “এটি আত্মহত্যা, না খুন, না পরিকল্পিত কোনো ঘটনা—আমরা জানি না। শুধু বলতে চাই, এমন পরিণতি যেন আর কারও না হয়।” তিনি আরও জানান, পরিবারের কারও সঙ্গে কোনো মনোমালিন্য ছিল না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে কোনো সমস্যা ছিল কি না তাও জানা নেই।
বিভুরঞ্জন সরকারের নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রকাশের পর শুক্রবার বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে অনলাইন গণমাধ্যমে তার পাঠানো একটি ‘খোলা চিঠি’ প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি সাংবাদিকতা জীবন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও গণমাধ্যম পরিস্থিতি, নিজের অসুস্থতা, ছেলেমেয়ের শিক্ষাজীবন ও চাকরির ব্যর্থতা এবং আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করেন।
তার স্ত্রীর ভাই দীপঙ্কর সাহা জানান, “চিঠিটি পরিবার আগে দেখেনি। দেখলে তাকে বাসা থেকে বের হতে দিত না।”
চিররঞ্জন সরকার আশা প্রকাশ করেন, পুলিশের তদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হবে।