রাশিয়া বিশ্বের প্রথম এইডসের টিকা আনতে যাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই বছরের মধ্যেই বাজারে আসতে পারে বহুল প্রতীক্ষিত এই ভ্যাকসিন।
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টারের মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির গুশচিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভ্যাকসিনটি এমআরএনএ প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী ভ্যাকসিনের তুলনায় এমআরএনএ প্রযুক্তি শরীরের কোষকে জেনেটিক নির্দেশনা দেয় নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরি করতে, যা ইমিউন প্রতিক্রিয়া জাগিয়ে ভাইরাস শনাক্ত করে এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গুশচিন বলেন, “আমরা এখন এমন অ্যান্টিজেন তৈরির পর্যায়ে আছি, যা বিস্তৃতভাবে কার্যকর ইমিউন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তবে ভ্যাকসিন কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করছে ব্যবহৃত ইমিউনোজেন কতটা কার্যকরভাবে সব ধরনের এইচআইভি ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে তার ওপর।”
তিনি আরও বলেন, এইচআইভি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় একটি ভাইরাস, যা ভ্যাকসিন তৈরিকে জটিল করে তোলে। তাই উন্নয়ন প্রক্রিয়া দুই ধাপে হবে। প্রথমে কম্পিউটার-ভিত্তিক ডিজাইনে ইমিউনোজেন তৈরি ও পরীক্ষা করা হবে। এরপর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ইমিউনোজেন জটিল প্রাণী মডেলে পরীক্ষিত হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে।
গামালিয়া সেন্টার এর আগে ২০২০ সালের আগস্টে বিশ্বের অন্যতম প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন “স্পুটনিক ভি” তৈরি করেছিল। সেটি প্রায় ৯৭.৮ শতাংশ কার্যকারিতা দেখায় এবং গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রায় ৭০টি দেশে ওই ভ্যাকসিন অনুমোদন পেয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়ক সংস্থা ইউএনএইডস-এর ২০২৫ সালের গ্লোবাল আপডেট অনুযায়ী, ২০১০ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী নতুন এইচআইভি সংক্রমণ ৪০ শতাংশ কমেছে। ২০২৪ সালে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ। একই সময়ে এইডস-সম্পর্কিত মৃত্যুহার কমেছে ৫৬ শতাংশ। বর্তমানে ৪ কোটি ৮ লাখ এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ৭৭ শতাংশ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি গ্রহণ করছেন এবং ৭৩ শতাংশ রোগীর ভাইরাল লোড নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।