স্টেথোস্কোপের আবিষ্কার হয়েছিল ১৮১৬ সালে। তখন থেকে চিকিৎসকেরা রোগীর শরীরের ভেতরের শব্দ শোনার কাজে এটি ব্যবহার করে আসছেন। তবে এবার সেই যন্ত্রেই আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। ব্রিটিশ গবেষকেরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত আধুনিক স্টেথোস্কোপ হৃদরোগ নির্ণয়ে নতুন বিপ্লব আনতে চলেছে।
প্রচলিত ধাতব চেস্টপিসের বদলে ব্যবহার করা হয় একটি ছোট ডিভাইস, আকারে খেলনার তাসের মতো।
এতে থাকা মাইক্রোফোন হৃদস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহের সূক্ষ্ম পার্থক্য শনাক্ত করতে পারে, যা মানুষের কানে ধরা পড়ে না।
যন্ত্রটি সঙ্গে সঙ্গে ইসিজি রেকর্ড করে।
সংগৃহীত তথ্য ক্লাউডে পাঠানো হয়, যেখানে এআই সিস্টেম হাজার হাজার রোগীর ডেটা বিশ্লেষণ করে ফলাফল জানায়।
গবেষকদের দাবি, মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই এআই স্টেথোস্কোপ শনাক্ত করতে পারে তিন ধরনের গুরুতর হৃদরোগ—
হার্ট ফেলিওর (Heart Failure)
হার্ট ভালভের সমস্যা (Heart Valve Disease)
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন (Abnormal Heart Rhythms)
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও এনএইচএসের যৌথ গবেষণায় ৯৬টি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রায় ১২ হাজার রোগীর উপর পরীক্ষা চালানো হয় এআই স্টেথোস্কোপ দিয়ে। ফলাফলে দেখা যায়—
হার্ট ফেলিওর শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে ২.৩৩ গুণ।
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন (যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়) শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে ৩.৫ গুণ।
হার্ট ভালভের রোগ ধরা পড়েছে ১.৯ গুণ বেশি।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও কার্ডিওলজিস্ট ড. সোনিয়া বাবু-নারায়ণ বলেন,
“২০০ বছর আগে আবিষ্কৃত সাধারণ স্টেথোস্কোপ এখন ২১ শতকের প্রযুক্তিতে বদলে যাচ্ছে। এ ধরনের উদ্ভাবন খুব জরুরি, কারণ অনেক সময় রোগ কেবল তখনই ধরা পড়ে যখন রোগী জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে আসেন।”
তিনি আরও বলেন, আগেভাগে রোগ ধরা গেলে চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা যায়, ফলে রোগীরা অনেক ভালো থাকতে পারেন।