চব্বিশের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযোগ গঠিত মামলার রায় আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রায় সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। একটি বিদেশি বার্তা সংস্থাও সরাসরি প্রচারের অনুমতি চেয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করে। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “এই অপরাধের দায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া উচিত।”
অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আসামিদের খালাসের আবেদন জানিয়েছেন।
মামলার মোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতা, পরিবার হারানো আন্দোলনকারীদের স্বজন, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। মামলার তৃতীয় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পরে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হন এবং আদালতে ঘটনার বর্ণনা দেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশসহ পাঁচটি অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। চলতি বছরের ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়।
প্রসিকিউশনের দাবি, গত বছরের আন্দোলনের সময় রংপুর, ঢাকা ও আশুলিয়ায় পৃথক হত্যাকাণ্ড এবং ব্যাপক আক্রমণ–গুলিবর্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
বহুল আলোচিত এই মামলার বিচারিক অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব শেষ হতে যাচ্ছে। আগামীকাল সকালেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আনুষ্ঠানিকভাবে রায় ঘোষণা করবে।