দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এবার কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে ৯০৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে ৪১৫ জন ও হল-হোস্টেল সংসদে ৪৯২ জন প্রার্থী আছেন। মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৭ জন, যার মধ্যে ছাত্র ১৬,০৮৪ এবং ছাত্রী ১১,৪৩৪ জন।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৬০টি কেন্দ্রে গড়ে ৪০০–৫০০ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন। ভোটের দিন বিশ্ববিদ্যালয় আইডি বা ব্যাংক পে-স্লিপ দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে। ভোটাররা পাঁচটি ব্যালটে ভোট দেবেন—চারটি কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য, একটি নিজ হলের জন্য।
“পুরো ক্যাম্পাস কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় থাকবে। শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে।”
ছাত্রদল প্যানেল: নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্যাম্পাস, নারী-পুরুষের সমান সুযোগ, ক্যান্টিনে ভর্তুকি বৃদ্ধি, আবাসন সংকট নিরসন, নারীদের জন্য ভেন্ডিং মেশিন ও নারী চিকিৎসক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি।
ছাত্রশিবির প্যানেল: সেশনজট নিরসন, লিগ্যাল এইড সেল গঠন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, গ্রিন ক্যাম্পাস, নিরাপদ বাস সার্ভিস চালু ও ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন (মাহফুজুর রহমান): পরিবহন ও আবাসন সংকট সমাধান, স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিতকরণ ও শিক্ষার্থীদের ঐক্য পুনর্গঠন।
এবার মোট ভোটারের প্রায় ৪০ শতাংশই নারী, যা ইতিহাসে সর্বাধিক। প্রার্থীরা নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, আলাদা জিমনেসিয়াম, স্বাস্থ্যসেবা ও শাটল ট্রেনে আলাদা বগির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
১৩টি প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭ জন নারী প্রার্থী। শীর্ষ পদে একমাত্র নারী প্রার্থী চৌধুরী তাসনীম জাহান শ্রাবণ (বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল, জিএস পদে)।
চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন নেতৃত্ব বেছে নেবে—যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে গণতান্ত্রিক, নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাসে রূপ দিতে পারবে, সেই প্রত্যাশায় মুখর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।