আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনের পর ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সময় তিনি রাজধানীবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছাও জানান।
কমিশনার জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তায় রাতে ৫০০টি এবং দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম মোতায়েন থাকবে। এর পাশাপাশি থাকবে গাড়ি পেট্রোল, ফুট পেট্রোল ও মোবাইল পেট্রোল। ফাঁকা নগরীতে নিরাপত্তা তৎপরতা জোরদার করতে অফিসে অবস্থানরত কর্মকর্তাদেরও সুপারভিশনের দায়িত্ব দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ ঢাকার প্রতিটি ঈদ জামাত কেন্দ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি সুসংগঠিত ও সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ঈদগাহ ময়দানে স্থাপিত হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম, যেখানে থেকে পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঈদগাহ মাঠ ও আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের তিনটি মুখ—মৎস্য ভবন ক্রসিং, প্রেস ক্লাবের সামনে এবং হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে থাকবে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা। মুসল্লিদের আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে এবং ম্যানুয়ালি তল্লাশি করে প্রবেশ করতে হবে। নারী মুসল্লিদের জন্য থাকবে আলাদা নামাজের জায়গা, প্রবেশপথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠ ও আশপাশ এলাকা এসবি ও সিটিটিসির সুইপিং টিম এবং ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। পাশাপাশি সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটও প্রস্তুত থাকবে।
ডিবি ও সিটিটিসির সাদা পোশাকধারী সদস্যরা মাঠে থাকবে এবং পুরো এলাকায় গঠন করা হবে আলাদা নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়া অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলবে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদসহ মহানগরীর ১১৮টি ঈদগাহ ও ১৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাতের জন্য একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া শিয়া ও কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের ৮টি এবং সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ৩টি জামাতেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
নগরবাসীর উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশিতে সহায়তা করুন, ঈদ জামাতে ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ সঙ্গে না আনুন এবং জামাত শেষে সুশৃঙ্খলভাবে মাঠ ত্যাগ করুন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানান।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সমন্বিত এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফলে নগরবাসী শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।