মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। এটি কেবল আনন্দ-উৎসবই নয়, বরং ত্যাগ, আত্মোৎসর্গ ও আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশের প্রতীক। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে যে আত্মত্যাগের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, ঈদুল আযহা সেই স্মৃতিকে চিরজাগরুক করে।

প্রতিটি বছর ঈদুল আযহার মাধ্যমে মুসলমানরা এই আত্মত্যাগের আদর্শকে স্মরণ করে কোরবানি দেন এবং মানবতার কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার শপথ নেন। কোরবানির মাংস আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী এবং গরিব-দুঃখীদের মাঝে বণ্টনের মধ্য দিয়ে সামাজিক সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়।

বর্তমান সময়ে ঈদুল আযহার ত্যাগের প্রকৃত শিক্ষা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। সমাজে যখন বৈষম্য, সহিংসতা ও স্বার্থপরতা বেড়ে চলেছে, তখন এই উৎসব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—নিজস্ব সুখের জন্য নয়, বরং অপরের কল্যাণে ত্যাগ করাই মানবতার আসল শিক্ষা। ঈদের আনন্দ তখনই পরিপূর্ণ হয়, যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ সে আনন্দে অংশ নিতে পারে।

অপরদিকে, কোরবানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতেও আমাদের যত্নবান হওয়া জরুরি। সুশৃঙ্খল ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশু জবাই, পরিবেশ রক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের পরিবেশ যেন পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ থাকে, সেটাও আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক কর্তব্য।

এই ঈদে আমাদের অঙ্গীকার হোক আত্মত্যাগ, সহানুভূতি এবং নৈতিকতা ভিত্তিক সমাজ গঠনের। আসুন, আমরা ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করি। ঈদুল আযহার ত্যাগের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আমরা যেন একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি—এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

পাঠক/দর্শক, আপনাদের সবার জীবনে আসুক ঈদের আনন্দ, শান্তি ও কল্যাণ।

ঈদ মোবারক।