জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম এখন দেশের রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছে, তবে বড় দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি ও ক্ষমতা নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার (৬ মে) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করে এনসিপি। সেখানে তারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভিত্তিক একটি পদ্ধতির বিস্তারিত তুলে ধরে, যা এর আগে কমিশনের সুপারিশেও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, “আমরা নীতিগতভাবে এ পদ্ধতির সঙ্গে একমত। এতে সংসদের দুই কক্ষ ছাড়াও দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৪টি কাউন্সিল থাকবে এবং প্রতি জেলা একটি করে ভোট দেবে।”
তবে এনসিপি মনে করে, এই প্রক্রিয়ায় সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যাতে ‘কেনাবেচার’ সুযোগ কমে আসে এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়।
তুষার আরও বলেন, “এভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য হবে এমন কাউকে মনোনয়ন দিতে, যার ব্যক্তিত্ব ও ভাবমূর্তি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ।”
বৈঠকে বিচার বিভাগ সংস্কার নিয়েও এনসিপি কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে। তাদের মতে, বিচারকদের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতিবছর প্রকাশ করতে হবে এবং প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সেই হিসাব তদন্ত করতে পারবে।
ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান। বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এনসিপির প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।