1. live@media71bd.com : Media71 : Media71
  2. info@www.media71bd.com : Media 71 :
রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন

রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভার শেষ: দৈনিক ৮-১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের আশা

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভার কাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে। কূপটি থেকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে পেট্রোবাংলা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স তার নিজস্ব রিগ ব্যবহার করে এ সাফল্য অর্জন করেছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের আওতাধীন কূপটিতে ৫ সেপ্টেম্বর প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রবাহ নিশ্চিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১০ বছরে এ কূপ থেকে প্রায় ২৫.৫৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। ওয়ার্কওভার কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকা, আর এই গ্যাসের বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এছাড়া গ্যাসের সঙ্গে উপজাত কনডেনসেটও পাওয়া যাবে।

চলমান উন্নয়ন প্রকল্প

রশিদপুর-৩ এর পাশাপাশি সিলেট অঞ্চলের অন্যান্য কূপেও ওয়ার্কওভার ও নতুন কূপ খননের কাজ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে কৈলাশটিলা-১ ও বিয়ানীবাজার-২ কূপ। একই সঙ্গে সিলেট-১০ এক্স, সিলেট-১১, ডুপিটিলা-১, কৈলাশটিলা-৯ এবং রশিদপুর-১১ ও ১৩ কূপ খনন প্রকল্পও এগিয়ে চলছে। এসব প্রকল্প সফল হলে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড।

উৎপাদন কমে আসার চ্যালেঞ্জ

তবে বাড়ন্ত চাহিদার বিপরীতে দেশীয় উৎপাদন কমে আসছে। ২০২৪ সালের ১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ১৬টি গ্যাস ফিল্ডের ৭৩টি কূপ থেকে ৮০১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হলেও এক বছর পর ২০২৫ সালের ১ আগস্ট উৎপাদন কমে ৬৯৬ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়ায়। একই সময়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর উৎপাদনও ১২২৭ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ১০৭৯ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে এক বছরে দেশের সামগ্রিক উৎপাদন কমেছে ২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট

সবচেয়ে বড় শঙ্কা বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড নিয়ে। ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ এর উৎপাদন ৫০০ মিলিয়নের নিচে নেমে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ আশঙ্কা সত্যি হলে দেশীয় উৎপাদন নেমে আসবে দেড় হাজার মিলিয়নে।

গ্যাসের দাম ও আমদানির চাপ

দেশীয় গ্যাসের গড় মূল্য যেখানে মাত্র ৬.০৭ টাকা, সেখানে আমদানিকৃত গ্যাসের মূল্য দাঁড়াচ্ছে ২৭.৫৩ টাকা। ফলে গড়পড়তা বিক্রয়মূল্যে প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ৪.৬০ টাকা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোকে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের জন্য দেওয়া হয়—

  • সিলেট গ্যাস ফিল্ড ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানিকে: প্রায় ২৮ টাকা

  • বাপেক্সকে: প্রায় ১১২ টাকা

অন্যদিকে বহুজাতিক কোম্পানিকে দেওয়া হয়—

  • শেভরন বাংলাদেশকে: ২.৭৬ ডলার

  • টাল্লোকে: ২.৩১ ডলার

আমদানিকৃত এলএনজির দাম এর চেয়ে অনেক বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে কাতার থেকে আমদানি করা এলএনজির গড় দাম ছিল ১০.৬৬ ডলার, আর ওমান থেকে আনা এলএনজির দাম পড়েছে ১০.০৯ ডলার

সম্ভাবনার জায়গা

২০১১ সালে আন্তর্জাতিক কোম্পানি স্লামবার্জার এক সমীক্ষায় বলেছিল, বিদ্যমান গ্যাস ফিল্ডগুলোর সংস্কার করে ৪০০ থেকে ৮০০ এমএমসিএফডি পর্যন্ত উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। এতে সর্বোচ্চ খরচ হতে পারে মাত্র ১২৫ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু দীর্ঘদিন সেই রিপোর্ট অবহেলায় পড়ে ছিল।

ফলে আমদানির ওপর নির্ভরতা বেড়েছে, আর দফায় দফায় গ্যাসের দামও বাড়াতে হয়েছে। এর মধ্যেই রশিদপুর-৩ কূপ থেকে নতুন করে গ্যাস প্রাপ্তি এক অনুকূল বার্তা হিসেবে এসেছে। বিদ্যমান পাইপলাইন ও প্রসেস প্ল্যান্ট থাকায় এই গ্যাস দ্রুত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!