ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ওয়েলকাম এলাকায় শনিবার সকালে একটি চারতলা আবাসিক ভবন ধসে পড়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভবনটি ধসের সময় ভেতরে অনেক মানুষ ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা বিকট শব্দ শুনে ছুটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে পুলিশ, দমকল বিভাগ এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
দমকল বিভাগের মুখপাত্র জানান, খবর পাওয়ার পর সাতটি ফায়ার টেন্ডার ও এনডিআরএফ-এর একটি দল ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়। এখন পর্যন্ত চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আরও অন্তত তিনজন ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার জানায়, ভবনের নিচতলায় একটি দোকান ছিল, যেখানে ভোরে কর্মচারীরা কাজ করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিকট শব্দের পর পুরো ভবনটি ধুলার মধ্যে মিশে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ২৫ বছরের পুরনো ভবনটির দীর্ঘদিন ধরে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। যদিও সরকারি নথিপত্রে এটি ঝুঁকিমুক্ত বলে উল্লেখ ছিল।
প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করা হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণ বা অনুমোদনহীন সংস্কারের প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়াদিল্লিতে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। গত এক বছরে রাজধানীতে অন্তত আটটি ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পুরনো ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও দুর্বল নির্মাণই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ।
নির্মাণ বিশেষজ্ঞ অরুণ চৌধুরী বলেন, “নয়াদিল্লির পুরনো এলাকায় বহু দুর্বল ভবন রয়েছে। নিয়মিত পরিদর্শন না হলে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।”
দিল্লি সরকার আহতদের চিকিৎসার সব খরচ বহনের ঘোষণা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “ভবন ধসের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা প্রার্থনা করি, যেন আর কেউ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে না থাকেন।”
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবনের চিহ্ন খুঁজে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।