টানা ১১ সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে মানবিক সহায়তা। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাঠানো ১০৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক ২২ মে দক্ষিণ-পূর্ব কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গাজার প্রবেশপথ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইসরাইলি সংস্থা ‘কোগাট’, এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি।
তবে জাতিসংঘ এখনও নিশ্চিত করেনি যে এই ত্রাণ গাজার অনাহারক্লিষ্ট অসহায় ফিলিস্তিনিদের হাতে পৌঁছেছে কি না।
কোগাটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহে সহায়তা করে যাব, তবে নিশ্চিত করব যেন এই ত্রাণ হামাসের হাতে না পড়ে।” ইসরাইল ত্রাণ চুরির জন্য হামাসকে দায়ী করলেও, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি এই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (WFP) কর্মকর্তা আঁতোয়ান রেনার্ড জানান, প্রতিদিন গাজার বাসিন্দাদের ন্যূনতম খাবারের প্রয়োজন মেটাতে অন্তত ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক দরকার। কিন্তু বর্তমানে প্রবেশ করা ত্রাণ সেই প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা জেরেমি বোয়েন বলেন, “গাজার দুই মিলিয়ন (২০ লাখ) মানুষের জন্য এই ত্রাণ একফোঁটা পানির মতো।”
যুদ্ধ শুরুর আগে প্রতিদিন গাজায় প্রায় ৫০০টি ট্রাক প্রবেশ করত। এতে খাদ্য, ওষুধ, শিশু খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী থাকত। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনের পর সেই সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে, বর্তমান সংকট সামাল দিতে গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের প্রয়োজন।
কিন্তু চলতি বছরের মার্চের শুরু থেকে ইসরাইল সকল ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে গাজাবাসী দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো একাধিকবার সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজার ২১ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটের কবলে রয়েছে।
জাতিসংঘ-সমর্থিত সংস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন (IPC)’ জানিয়েছে, আগামী মাসে গাজার পাঁচ লাখ মানুষ ‘চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়’ পড়বে। এতে শিশু মৃত্যু ও ক্ষুধামৃত্যুর আশঙ্কা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
সূত্র: বিবিসি