অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকায় সচিব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি থেকে সরে এসেছে। মঙ্গলবার এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ ব্যাখ্যা প্রদান করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল দেশের ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের। তবে সচিব কমিটি মনে করে, এত অল্প সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগে প্রাথমিক শিক্ষায় কার্যকর সুফল পাওয়া যাবে না, বরং বৈষম্য তৈরি হবে।
বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ কার্যকর হলে একই শিক্ষককে ২০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে হতো, যা নিয়মিত শ্রেণিকাজ পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি করত বলে কমিটির মতামত।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে অর্থের সংস্থান তৈরি হলে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষকের পদ সৃজন এবং সে অনুযায়ী নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
এর আগে, ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন সৃষ্টি করা সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাতিল করে। একই সঙ্গে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’-এ কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট নতুন নিয়োগ বিধিমালা জারি করা হয়, যেখানে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে এরপর থেকেই ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টিকে সমালোচনা করতে থাকে।
১৬ সেপ্টেম্বর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির সমালোচনা করে প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান।
একই দিনে আয়োজিত এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির তীব্র সমালোচনা করেন।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর, হেফাজতে ইসলাম প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী এজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে বিধিমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছিল।