ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সাংগঠনিকভাবে ভেঙে পড়ে আওয়ামী লীগ। দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মন্তব্য করেছেন, “আওয়ামী লীগের ভুল ছিল, আর এই ভুলেরই আজ শাস্তি পাচ্ছে দলটি।”
সম্প্রতি থাইল্যান্ড থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান তার শ্যালক ডা. আনম নওশাদ খান। তিনি বলেন, “আবদুল হামিদ প্রায়ই বলেন, গত ১৬ বছরে আমাদের অনেক ভুল ছিল। না হলে এমনটা হতো না। আজকের পরিণতি সেই ভুলেরই ফল।”
আবদুল হামিদ আক্ষেপ করে বলেন, “২০১২ সালে স্পিকার থাকা অবস্থায় বলেছিলাম, সরকার স্বৈরাচারী হলে জনগণ বেশিদিন সায় দেবে না।” তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে রাজনীতি করতে হলে আওয়ামী লীগকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
বর্তমানে অসুস্থ আবদুল হামিদ রাজনীতি থেকে একেবারেই দূরে। শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। ‘থ্রি টু ফোর স্টেজ’-এর মাঝামাঝি পর্যায়ের লাং ক্যানসারে ভুগছেন তিনি। নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারেন না, এমনকি নামাজও আদায় করতে পারছেন না।
তাঁর শ্যালক নওশাদ খান জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি এখন পুরোপুরি পারিবারিক আবহে আছেন। কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ নেই, এমনকি শেখ হাসিনার সঙ্গেও ৫ আগস্টের পর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
তবে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা ও শারীরিক দুর্বলতার মাঝেও আবদুল হামিদ এখনো নিয়মিত পত্রিকা পড়েন এবং সুযোগ পেলে টেলিভিশনেও দেশের খবর দেখেন। দেশে ফিরে মানসিকভাবে ভালো আছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি নিজেই বলেছেন, “আমি দেশে ফিরবই। যা হবার হবে। দেশেই আমার আত্মীয়স্বজন, এখানেই মৃত্যু হলে মেনে নেব।”
বর্তমানে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত, শীর্ষ নেতারা জেলে বা পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে চলছে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যার অভিযোগে বিচার। এমতাবস্থায়, এক সময়ের শাসক দল আজ রাজনীতি থেকে কার্যত নিষিদ্ধ।