ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নের বাসিন্দারা সংসদীয় সমীনা পুনঃনির্ধারণের প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সড়ক অবরোধ করেছেন। তারা সামিয়ানা টাঙিয়ে, চৌকি পেতে এবং সাউন্ডবক্সে গান বাজিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন। রাস্তায় ফুটবল খেলা চলছে এবং দফায় দফায় মিনারেল পানি ও দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।
সড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কে জরুরি পরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দূরপাল্লার কয়েক শত বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকার আটকা পড়েছে। ফলে সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাসে থাকা নারী, শিশুসহ বহু যাত্রী অসুবিধার মুখে পড়েছেন।
আন্দোলনের মূল কারণ হলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত। স্থানীয়রা এই সংযোজনকে অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন। আলগীর ইউনিয়নের সম্রাট মিয়া বলেন, “আমার বাড়ি ভাঙ্গা থানার পাশে। মাত্র দশটা রিক্সা ভাড়া দিয়ে থানায় যাওয়া যায়, অথচ আমাদের বিশ কিলোমিটার দূরে সংযুক্ত করা হয়েছে।” কিবরিয়া বিশ্বাস বলেন, “আমরা ভাঙ্গা থানা ছাড়া অন্য কোথাও যাব না। যতক্ষণ না আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়, আন্দোলন চলবে।”
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ফরিদপুরের দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। বিএনপি, সিপিবি, খেলাফত মজলিসসহ অন্যান্য দল আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা গোলচত্বর অবরোধ করে দুই দফায় আন্দোলন চালানো হয়। এরপর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পুনরায় ১১ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়, যার ফলে প্রায় ৪০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ড, মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড ও আলগীর সুয়াদিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। এদিন পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নজরে রেখেছেন।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন, যা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, এটি একটি জাতীয় সমস্যা, যার সমাধানও জাতীয়ভাবে করতে হবে।