স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এবং যৌতুক মামলার অভিযোগে স্বামী রবিউল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) যশোরের একটি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রবিউল ইসলাম যশোর সদরের বালিয়াডাঙ্গা মান্দারতলা গ্রামের ওয়াজেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে। তার স্ত্রী আফসানা আফরোজ ইয়াসমিন, শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসিন্দা, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যৌতুক নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রবিউল ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন, যা নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে আদালতের নজরে বিষয়টি এলে বিচারক রবিউলের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। তখন রবিউল ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। পরে ভুল স্বীকার করে ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর সাড়ে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে আফরোজ ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন রবিউল। তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তিনি ফের যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং একটি নেট কারখানা করে দেওয়ার দাবি জানান। বাধ্য হয়ে আফরোজ ইয়াসমিনের পরিবার জমিতে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে একটি কারখানা নির্মাণ করে দেয়। এরপর আরও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে মারধর শুরু করেন রবিউল।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়, যৌতুক না দেওয়ায় ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ইয়াসমিনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি দুই পরিবারের মধ্যে পুনরায় যোগাযোগ হলে রবিউল জানিয়ে দেন, বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক না পেলে তিনি আর স্ত্রীকে গ্রহণ করবেন না। ফলে ২৪ ফেব্রুয়ারি লিগ্যাল এইডের সহযোগিতায় আফরোজ আদালতে মামলা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী কামরুন নাহার কণা জানান, আদালত সমন জারি করলে রবিউল ২৯ জুন হাজির হয়ে মীমাংসার শর্তে জামিন পান। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি বাদীর সঙ্গে কোনো মীমাংসা না করে বরং স্ত্রীকে তালাক দেন ও আদালতে দুটি পাল্টা মামলা করেন। এ সময় তিনি স্ত্রীকে সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে ফেসবুকে অন্তরঙ্গ ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
আদালতে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হলে বিচারক তা আমলে নিয়ে রবিউলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ সময় আফরোজ ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, রবিউল এর আগেও শংকরপুরের সালমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তার কাছ থেকেও যৌতুক আদায়ের জন্য নির্যাতন চালিয়ে তাড়িয়ে দেন, যা বিয়ের পর আফরোজ জানতে পারেন।