গুম ও খুনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনাবাহিনী। তাদের মধ্যে একজন অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) ছিলেন। এদের মধ্যে মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ৯ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নোটিশ ছাড়া অনুপস্থিত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেস–১-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
তিনি জানান, গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি রিপোর্ট জমা পড়ে—যার একটি ছিল ডিজিএফআই কর্মকর্তাদের গুম সংক্রান্ত, একটি র্যাবের টিএফআই সেল সংক্রান্ত এবং একটি রামপুরার গুলিবর্ষণ ঘটনা নিয়ে। এসবের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা কার্যকর করার নির্দেশ দেয়।
মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “গ্রেফতারি পরোয়ানা হাতে না পেলেও আমরা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৯ অক্টোবর সকালে সেনা সদরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিই। সবাই রিপোর্ট করলেও মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ অনুপস্থিত থাকেন। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো তথ্য মেলেনি। তাকে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ হিসেবে গণ্য করে সেনা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, নিখোঁজ কর্মকর্তার প্রতি নজরদারি বাড়াতে ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেন তিনি দেশ ত্যাগ করতে না পারেন।
হেফাজতে থাকা ১৫ কর্মকর্তার বিষয়ে তিনি বলেন, “তাদের সেনা কাস্টডিতে রাখা হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই স্বপ্রণোদিতভাবে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চায় গুম ও খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সুষ্ঠু বিচার হোক। ন্যায়বিচারের প্রশ্নে আমরা আপসহীন।”