জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। বৃহস্পতিবার কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এই ঘোষণা দেন।

শাটডাউনের ঘোষণা
অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, "আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি। আমাদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমরা আমাদের অধিকার আদায় না করে ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। এই সময়ে কোনো ক্লাস, পরীক্ষা বা শিক্ষা কার্যক্রম চলবে না।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করা হলে ভালো ফল হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।"

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের চার দফা দাবি তুলে ধরেছেন:

1. আবাসন বৃত্তি: ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করতে হবে।

2. বাজেট: জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন করতে হবে।

3. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস: দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

4. হামলার বিচার: ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সংঘর্ষের পটভূমি
বুধবার সকাল ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চ শুরু করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং গরম পানি নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে, এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন।

উপদেষ্টার ব্রিফিং ও উত্তেজনা
পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ব্রিফিং করতে আসেন, কিন্তু তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্ট হন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কেউ একজন বোতল ছুড়ে মারেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা ব্রিফিং বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আন্দোলন অব্যাহত
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও এখনো অবস্থান ছাড়েননি, কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়েও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।