সিলেটের কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবির কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না। চোরাকারবারীরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশলে ভারত থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, চিনি, চা-পাতা, নাসির বিড়ি, সিগারেট, কসমেটিকস, কাপড়, সুপারি, ইলেকট্রনিকস সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সীমান্ত পেরিয়ে দেশে আনছে।
সম্প্রতি চোরাকারবারীরা ভারতীয় চা-পাতার বস্তার ভেতরে কসমেটিকস ও মাদকদ্রব্য লুকিয়ে এনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছে। কয়েক মাস ধরে কানাইঘাট উপজেলার ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের মীরমাটি গ্রামের এক প্রবাসীর বসতবাড়ির দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে জৈন্তাপুর ও কানাইঘাটের একটি সংঘবদ্ধ চক্র এসব অবৈধ পণ্য মজুদ ও বিক্রি করে আসছিল।
স্থানীয়দের বাধা সত্ত্বেও চোরাকারবারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে কানাইঘাট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ির দুটি কক্ষ থেকে ৬৯ বস্তা ভারতীয় চা-পাতা জব্দ করে এবং জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকার তিনজন চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করে। থানায় জব্দকৃত বস্তাগুলো খুলে দেখা যায়, চা-পাতার ভেতরে বিভিন্ন ভারতীয় কসমেটিকস সামগ্রীও রয়েছে।
পরে পুলিশ এসব চা-পাতা ও কসমেটিকস জব্দ করে সিজার লিস্ট প্রস্তুত করে এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গ্রেফতার হওয়া তিনজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪–৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী সুরইঘাট ও বড়বন্দ এলাকা দিয়ে চা-পাতার বস্তায় ভরে মাদকদ্রব্য ও কসমেটিকস সামগ্রী দেশে আনছে চোরাকারবারীরা। জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকায় সম্প্রতি সেনাবাহিনীর অভিযানে কয়েকটি চোরাকারবারী আস্তানা ধ্বংস হওয়ার পর ওই এলাকার চোরাকারবারীরা কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু চোরাকারবারী পুলিশের কাছ থেকে মাসোহারা দিয়ে এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি দায়িত্ব পালন করে। তবুও থানা পুলিশ নিয়মিতভাবে চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।