মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, পরিবেশ মূল্যায়নে শুধুমাত্র ইকোলজিক্যাল দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করা যথেষ্ট নয়; মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা, পরিচয় ও তাদের শ্রমের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিকেও মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সিক্স সিজনস হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (CSD) ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের প্রাণিজ প্রোটিনের বড় অংশ আসে মাছ, ডিম ও অন্যান্য প্রাণিজাত পণ্য থেকে—যা মূলত ক্ষুদ্র খামারিরা উৎপাদন করছেন, এবং তাদের বড় অংশই নারী। কিন্তু তাদের এই অবদান এখনো নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমা রয়েছে। জলজ জীববৈচিত্র্যে আমরা অত্যন্ত সমৃদ্ধ হলেও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ এখনো যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অন্যদিকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সড়ক নির্মাণে পর্যাপ্ত কালভার্ট না থাকায় বহু স্থানে জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা মাছের বিচরণ ও প্রাকৃতিক উৎপাদন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”

ফরিদা আখতার বলেন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ‘মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া’ ঘোষণার মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণের উদ্যোগও চলমান আছে। তবে এসব উদ্যোগ আরও সমন্বিত ও সুসংগঠিতভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “বাংলাদেশ প্রাকৃতিক ও সামুদ্রিক মাছের বৈচিত্র্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হলেও দূষণ—বিশেষ করে প্লাস্টিক ও শিল্পবর্জ্যের কারণে মাছের জীবন ও খাদ্যনিরাপত্তা ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে।”

সম্মেলনে ইউল্যাব-এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ইমরান রহমান স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি এবং অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সাইদা মাদিহা মুরশেদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শারমিন্দ নীলোরমী।
সেমিনারে বিভিন্ন নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।