বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা ও যৌথ গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার ইউজিসিতে আয়োজিত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং নেটওয়ার্কিং বিষয়ক এক যৌথ সেশনে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান এবং প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব।
নেটওয়ার্কিং সেশনে বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়, যৌথ মাস্টার্স, পিএইচডি ও পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম চালু, বায়োটেকনোলজি ও হেলথ সায়েন্সেসে গবেষণায় সহযোগিতা, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ বৃদ্ধি, ভাষা ও সংস্কৃতির বিনিময়, যৌথ গবেষণা প্রকল্প, উচ্চশিক্ষায় সুশাসন নিয়ে পলিসি ডায়ালগ এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদারে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ফায়েজ বলেন, মালয়েশিয়ায় বিশ্বমানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যারা পশ্চিমা বিশ্বসমতুল্য উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, উভয় দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ সহজ করতে ক্রেডিট ট্রান্সফার, ভিসা জটিলতা নিরসনসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন।
তিনি সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। উন্নতমানের ল্যাব, দক্ষ শিক্ষক, মিলেমিশে থাকা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ—সব মিলিয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় দুই দেশের মধ্যে অগ্রগতির সুযোগ অত্যন্ত উজ্জ্বল। ইউজিসি এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত সুহাদা ওসমান বলেন, তার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রদান করছে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে প্রথম ১০০-তে থাকা মালয়েশিয়ার ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকৌশল, প্রযুক্তি, ব্যবসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তিনি গবেষণা, বৃত্তি, যৌথ ডিগ্রি, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ এবং ভাষা শিক্ষা প্রোগ্রামে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্যরা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় যৌথ সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভীন এবং এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস)-এর কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজি প্রধান আজহার বিন মোহাম্মদ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউজিসির ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক খন্দকার সাবাহাত রিজভী। এতে দেশের ৫২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ইউজিসির পরিচালক, রেজিস্ট্রার, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ডেস্কের কর্মকর্তাসহ মালয়েশিয়ার ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা দুই দেশের যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়নে তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের অধ্যয়ন, গবেষণা ও পাঠদানের সুযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইউজিসি ও মালয়েশিয়ার ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পৃথক পৃথক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।