জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বৃক্ষমেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ছাত্র বলয়’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এই বলয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সম্পৃক্ত থাকবে বলে জানান তিনি।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে অনুষ্ঠিত মাসব্যাপী বৃক্ষমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, “বৃক্ষমেলা শুধু গাছ বিক্রির জায়গা নয়, এটি পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির এক মহৎ উদ্যোগ। এই মেলায় অংশগ্রহণকারীরা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।”
তিনি জানান, স্টল বরাদ্দে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, “অনেকে বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির গাছ এনেছেন, কেউ কেউ বিদেশি গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন—এসব মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে বাস্তব সংযোগ তৈরি করেছে।”
ভবিষ্যতের বৃক্ষমেলায় পরিবেশবান্ধব নার্সারিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং পরিবেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উপকরণ পরিহারের ওপরও তিনি জোর দেন। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা, ল্যান্ডস্কেপিং এবং পারিবারিক বিনোদনের পরিবেশ তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের গাছ চেনা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন। এছাড়া, নির্বাচিত স্টল মালিক এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখা ব্যক্তিদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং উপপ্রধান বন সংরক্ষক রকিবুল হাসান।
উল্লেখ্য, ২৫ জুন থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলায় মোট ১১২টি স্টল অংশ নেয়, যার মধ্যে সরকারি ছিল ৮টি, বেসরকারি ৮টি, সিঙ্গেল নার্সারি ৯২টি এবং ডাবল নার্সারি ১৮টি।
মেলায় মোট ১৬ লাখ ৯১ হাজার ৪২৩টি চারা বিক্রি হয়েছে যার আর্থিক মূল্য ১৪ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৪৭৪ টাকা। বিক্রিত চারাগুলোর মধ্যে ফলজ ছিল ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪০টি, বনজ ২ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৪টি, ঔষধি ১ লাখ ১৪ হাজার ৫১৫টি, মশলা ১ লাখ ১০১টি, ক্যাকটাস ১ লাখ ২ হাজার ৮৯টি, অর্কিড ৭৪ হাজার ৫৪১টি, শোভাবর্ধনকারী ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৭৪টি, দেশীয় বিরল বা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির চারা ছিল ৩৭ হাজার ৩২১টি এবং অন্যান্য চারা ২ লাখ ২২ হাজার ২০টি।
চেয়ারম্যানঃ এম এস চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালকঃ মোঃ এম রহমান, ঠিকানাঃ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত