জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য আসন সমঝোতা প্রশ্নে আপাতত বিএনপির দিকেই বেশি ঝুঁকছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বিএনপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও যোগাযোগের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
উভয় দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করতে চায়। পাশাপাশি বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রিসভায়ও অংশগ্রহণের সুযোগ চাইছে দলটি।
এর আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, সংস্কার ও জুলাই সনদের দাবির সঙ্গে কোনো দল সংহতি প্রকাশ করলে জোট বা সমঝোতা বিবেচনা করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত এসব আলোচনা সম্পূর্ণ অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়েছে। এনসিপি এককভাবে মাঠে নামবে নাকি জোটে যাবে—সেই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, এনসিপির নেতারা শুধু আসন নয়, নিজেদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়েও নিশ্চয়তা চান। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় তারা বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনসিপি থেকে তিনজনকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব তুলেছেন। তবে বিএনপি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আশ্বাস দেয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট অবস্থান হলো, এনসিপি যেন জামায়াত ইসলামী বা ডানপন্থী কোনো জোটে না যায়।
অন্যদিকে এনসিপি-সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, জামায়াতে ইসলামীরও এনসিপির সঙ্গে সমঝোতায় আগ্রহ রয়েছে এবং তারা বিএনপির চেয়েও বেশি ছাড় দিতে রাজি। তবে এনসিপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মতে, নতুন এই দলটি ‘ডানপন্থী’ তকমা নিতে চায় না, বরং নিজেদের মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত করতে চায়।
নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা নিয়ে ২ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের মৌলিক দাবিগুলোর সঙ্গে যারা কাছাকাছি আছে, এ রকম দলের সঙ্গে আমাদের যদি ঐক্যবদ্ধ হতে হয় বা কোনো ধরনের সমঝোতায় যেতে হয়, তাহলে সেটা আমরা বিবেচনায় রাখব।”
সূত্র জানায়, এনসিপি ঢাকায় চারটিসহ অন্তত ২০টি আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করতে চায়। এসব আসনের কিছুতে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করলেও আলোচনায় অগ্রগতি হলে সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে প্রার্থী প্রত্যাহার করার সম্ভাবনাও রয়েছে।