প্রায় ১৩ বছর পর বাংলাদেশ সফরে এলেন পাকিস্তানের কোনো উচ্চপর্যায়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ সফরকে “দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” বলে উল্লেখ করা হয়েছে—খবর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজের।
এর আগে ২০১২ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় এসেছিলেন। সেই সফরের পর এটিই হচ্ছে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, গত দুই দশক ধরে ঢাকা–ইসলামাবাদ সম্পর্ক অনেকটাই শীতল ছিল। তবে সম্প্রতি সম্পর্ক উষ্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ ঢাকায় আসেন এবং এবার সফরে এসেছেন ইসহাক দার।
সফরের প্রথম দিন শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের পক্ষ থেকে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও নাগরিক সমাজের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন ইসহাক দার।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৈঠকে ৬-৭টি চুক্তি ও সমঝোতা সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ, দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সংস্কৃতি বিনিময়, ফরেন সার্ভিস একাডেমির সহযোগিতা, রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও পাকিস্তানের ইসলামাবাদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইপিআরআই) মধ্যে সমঝোতা। বৈঠক শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজন করবে বাংলাদেশ।
রবিবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ইসহাক দার। এছাড়া তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসায় দেখা করবেন এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।