
রাজনৈতিক অস্থিরতা, জ্বালানি সংকট ও নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে আবারও বড় ধাক্কা খেল বাংলাদেশের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল–জুন) এফডিআই আগের প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৬২ শতাংশ কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, এপ্রিল–জুন সময়ে নিট এফডিআই এসেছে মাত্র ৩০ কোটি ৩২ লাখ ডলার, যা জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকের ৭৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার থেকে ৬১.৫২ শতাংশ কম। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিনিয়োগ বেড়েছে ১১.৪১ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক রূপান্তরকালীন অনিশ্চয়তা ও বিদ্যুৎ–গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ‘অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণ’ নীতি গ্রহণ করেছেন।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজের (সিএসপিএস) নির্বাহী পরিচালক ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মিজানুর রহমান বলেন, “বিনিয়োগকারীরা এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে, নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে। পশ্চিমা বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতা ছাড়া বড় সিদ্ধান্তে যান না। তাই বিনিয়োগে এই পতনটা অপ্রত্যাশিত নয়।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে নতুন ইকুইটি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৮ কোটি ১৩ লাখ ডলার, যা আগের তিন মাসের তুলনায় ৬৯ শতাংশ কম। একই সময়ে পুনর্বিনিয়োগ আয় কমেছে ১২ শতাংশ এবং আন্ত–কম্পানি ঋণ কমেছে প্রায় ৮৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, গত আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিবর্তন ও আইন–শৃঙ্খলার অবনতি বিদেশি বিনিয়োগে তাৎক্ষণিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যদিও নতুন সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে, স্থিতিশীলতা না ফিরলে প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না।
এদিকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, বেশ কিছু বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিনিধিদল আলোচনা করছে। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নীতিগত নিশ্চয়তা না থাকায় তারা এখনো বিনিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাচ্ছেন না।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি
Leave a Reply