সাত দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গলবার (২৭ মে) থেকে সারা দেশে বিদ্যুৎ সেবা অব্যাহত রেখে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (২৬ মে) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলমান অবস্থান কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে এ ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনার উদ্যোগ না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছি। তবে দেশের কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে না।”
এর আগে গত ২১ মে থেকে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘বৈষম্যহীন আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থা’ গঠনের দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই কর্মসূচির সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক বা বাহ্যিক শক্তির সংশ্লিষ্টতা নেই; এটি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিরুদ্ধে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াই।
এক সংবাদ সম্মেলনে পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন আরইবি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় এবং অভিযোগ তোলে—চলমান প্রশাসনিক বৈষম্য, হয়রানি ও দমন-পীড়ন দূর করতেই তাদের এ আন্দোলন।
সাত দফা দাবি সংক্ষেপে:
১. আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ — দমন-পীড়ন ও অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ।
২. এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি — আরইবি ও সমিতিকে একীভূত করে বা বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার আদলে পুনর্গঠন।
৩. চাকরি নিয়মিতকরণ — মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পৌষ্য কর্মীদের চাকরি স্থায়ী করা।
৪. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পুনর্বহাল — হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও বরখাস্তদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. হয়রানি ও বদলি বাতিল — শাস্তিমূলক বদলি বন্ধ ও বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহাল।
৬. মানবসম্পদ ঘাটতি পূরণ — আন্তর্জাতিক মান অনুসারে জরুরি সেবা নিশ্চিতে শিফটভিত্তিক জনবল নিয়োগ।
৭. অন্তর্বর্তী বোর্ড গঠন — পূর্ণ সংস্কারের আগ পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্য ও অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ না এলে আন্দোলনের পরিধি আরও বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।