তুরস্কের ইস্তানবুলে ম্যাগাজিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশের অভিযোগে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার তুরস্কের বিভিন্ন শহরে এই ইস্যুতে উত্তাল বিক্ষোভ দেখা দেয়।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে লেমান ম্যাগাজিনের ২৬ জুন, ২০২৫ সংখ্যায় প্রকাশিত একটি কার্টুনকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ ওঠে, কার্টুনটিতে ধর্মীয় মূল্যবোধকে অপমান করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সাদা-কালো ওই কার্টুনে দেখা যায়, আকাশে ভাসমান দুটি চরিত্রের একজন বলছেন, ‘সালাম আলাইকুম, আমি মোহাম্মদ।’ অপরজন জবাব দেন, ‘আলাইকুম সালাম, আমি মূসা।’
ইস্তানবুলের প্রধান কৌঁসুলির অফিস জানায়, এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে ম্যাগাজিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তবে লেমান ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক তুনচায় আকগুন ফ্রান্সের প্যারিস থেকে ফোনে এএফপিকে জানান, এটি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র নয়। বরং ইসরায়েলি হামলায় নিহত একজন মুসলিমের কাল্পনিক নাম হিসেবে ‘মোহাম্মদ’ ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে প্রায় ২০ কোটি মানুষের নাম মোহাম্মদ — এর অর্থ এই নয় যে এটি নবীজি (সা.)-এর প্রতি নির্দেশ করে। আমরা কখনোই এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে ঝুঁকি নিতাম না।”
এক্সে একাধিক পোস্টে লেমান ম্যাগাজিন দাবি করেছে, কার্টুনটি ইচ্ছাকৃতভাবে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, উসকানিমূলক উদ্দেশ্যে। কার্টুনিস্টের উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলি হামলায় নিহত নিরপরাধ মুসলিমের ধর্মীয় অধিকারের প্রতিফলন ঘটানো, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা নয়।
ম্যাগাজিনের সম্পাদক আকগুন আরও বলেন, “এই ঘটনাকে ফ্রান্সের শার্লি হেবদোর সঙ্গে তুলনা করাটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উদ্বেগজনক।”
ঘটনার জেরে ইস্তানবুল শহরের কেন্দ্রস্থলে লেমান ম্যাগাজিনের কর্মীদের নিয়মিত যাতায়াত করা একটি বারে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে তা ২৫০-৩০০ জনের সংঘর্ষে রূপ নেয়। ঘটনাস্থল থেকে কার্টুনিস্টসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ম্যাগাজিনের কার্টুনিস্ট, গ্রাফিক ডিজাইনার ও আরও দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত লেমান ম্যাগাজিনের অফিসও পুলিশ দখলে নিয়েছে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সহকারী ফাহরেত্তিন আলতিন জানান, ম্যাগাজিনের আরও কিছু শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
চেয়ারম্যানঃ এম এস চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালকঃ মোঃ এম রহমান, ঠিকানাঃ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত