নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস। এগারটি ইউনিয়ন নিয়ে পূর্বধলা উপজেলা গঠিত। তাদের জন্য একমাত্র সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র হলো পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাস পাতালে কম পক্ষে ২৫ জন ডাক্তার, ৩০ জন নার্স, ৫ জন ক্লিনার ৪ জন গার্ড থাকা প্রয়োজন। সেখানে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন ডাক্তারের পরিবর্তে ৪ জন ডাক্তার রয়েছে,তার মধ্যে একজন রয়েছে ছুটিতে, তিন জনের মধ্যে অনেকে আবার অনুপস্হিত।
চিকিৎসক, নার্স, ক্লিনারের অভাবে তাই বেহাল অবস্হা পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের।প্রতিদিন বহির্বিভাগে থাকছে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। অনেকে চিকিৎসা সেবা সময় মত না পেয়ে চলে যায়।
পূর্বধলার ৫০ শয্যা হাসপাতালে ৮ জুলাই মঙ্গলবার ২০২৫ ইং গিয়ে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত রোগী ভর্তি থাকছে প্রায় ১২০ থেকে ১৩০ জন। সেই সাথে রোগীদের সাথেও আসছে তাদের পরিবার বর্গের লোকজন। ফলে সিট না পেয়ে অনেক রোগীকে হাস পাতালের ফ্লোরে এবং বারিন্দায় থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি মৌদাম জাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা, ঘাগড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ আঃ সালাম অভিযোগ করে বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিয়মিত ডাক্তার, নার্স আসে না। হাস পাতাল অপরিষ্কার, নিয়মিত ঝাড়ু দেয় না ময়লাও পরিষ্কার করে না।ঔষধ নিয়মিত পাই না,বাহির থেকে অনেক ঔষধ কিনে আনতে হয়। নার্সদের কাছে গেলেও তারা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। সেই সাথে হাসপাতালের বেশির রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাদ্য তাদের দেওয়া হয় তা মানে ভাল না,পরিমাণ কম দেওয়া হয়।
রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, সকালে নাস্তার জন্য যে কলা, রুটি দেওয়া হয় তা নিম্নমানের। তারা বলেন, দুপুর ও রাতে যে ভাত দেওয়া হয় তা সরকারি রেশন চাউলের মোটা ভাত যা রোগীরা খেতে পারে না। হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছিয়া বলেন, রান্না করা তরকারী ও নিম্ন খোলা বাজারের তেল দিয়ে পাক করা। তিনি বলেন তরকারীতে মসলার আইটেম ও পরিমাণে কম দেওয়া। যার ফলে মোটা চালের ভাত, তরকারী রোগীরা খেতে পারে না। রোগীর স্বজনরা বাহির থেকে খাবার নিয়ে আসে রোগীদের জন্য।
জানা যায় রোমান সচেতন কল্যাণ সংস্হার পরিবেশক মোঃ মাহাবুবুর রহমান ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং থেকে হাসপাতালে খাবার সরবরাহ করে আসছে। রোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাহার সাথে ফোনে ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নাই। রোগীদের সাথে বা রোগীর স্বজদের সাথে নার্সদের খারাপ আচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে, নার্সিং ইনচার্জ সাধনা রাণীদাস বলেন, আমি বা আমার নার্সরা কখনোই তা করি না সর্বোত্তম সেবা দেওয়া চেষ্টা করি।
হাসপাতালে ডাত্তার সংকট, ঔষধ সংকট, ক্লিনার সংকট, গার্ড সংকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে, পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্হ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, এটা জাতীয় সমস্যা, আমরা আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদে জানিয়েছি তারা অচিরেই পদক্ষেপ নিবেন।
রোমান সচেতন কল্যাণ সংস্হার হাসপাতালে নিম্ন মানের খাবার সরবরাহ সম্পর্কে জাতে চাইলে বলেন, আমার জানা নাই। এ রকম হলে জেনে যথাযথ ব্যবস্হা নিব।