বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে পদত্যাগপত্রের ছবি প্রকাশ করেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিটও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

পূর্ব লন্ডনের বো এলাকায় নিজের মালিকানাধীন একটি টাউনহাউস থেকে ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করে ভাড়া এক লাফে ৭০০ পাউন্ড বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন রুশনারা। ওই বাড়িতে আগে চারজন ভাড়াটে মাসিক ৩ হাজার ৩০০ পাউন্ড ভাড়ায় থাকতেন। চুক্তি শেষ হওয়ার পর গত নভেম্বর মাসে চার মাসের নোটিশ দিয়ে তাদের বাড়ি ছাড়তে বলা হয়। পরে বাড়িটি ৪ হাজার পাউন্ড মাসিক ভাড়ায় পুনরায় তালিকাভুক্ত করা হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে রুশনারা লিখেছেন, সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী কাজে যেন তার অবস্থান বিভ্রান্তির কারণ না হয়, সে জন্য তিনি দায়িত্ব ছাড়ছেন। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পদত্যাগের কথা জানিয়ে তিনি দাবি করেন, দায়িত্ব পালনে তিনি আন্তরিক ছিলেন এবং তার কাজের নথি তার প্রমাণ বহন করে। তবে মন্ত্রিত্বে থাকলে সরকারের কাজে মনোযোগ বিঘ্নিত হবে বলে মনে করেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন।

রুশনারা আলী যুক্তরাজ্যের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি। ২০১০ সাল থেকে টানা এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন তিনি। গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকার বেথনালগ্রিন ও স্টেপনি আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো জয়ী হয়ে গৃহায়ণ, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি হন। এটিই ছিল যুক্তরাজ্য সরকারে তার প্রথম মন্ত্রিত্ব।

রুশনারা সম্প্রতি বেসরকারি মালিকদের মাধ্যমে ভাড়াটে শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘রেন্টার্স রাইটস বিল’-এর পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ওই বিলে বলা হয়, কোনো বাড়িওয়ালা ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করে ছয় মাসের মধ্যে বেশি দামে ভাড়া দিতে পারবেন না। সমালোচকরা বলছেন, তার কর্মকাণ্ড এই বিলের উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।

রেন্টার্স রিফর্ম কোয়ালিশন, ভাড়াটে অধিকার সংগঠন অ্যাকর্ন ও গ্রিন পার্টি রুশনারার পদত্যাগ দাবি করে। অ্যাকর্নের এক কর্মকর্তা বলেন, তার আচরণ ভাড়াটে অধিকার সুরক্ষার পরিপন্থী। কনজারভেটিভ পার্টির শ্যাডো হাউজিং সেক্রেটারি জেমস ক্লেভারলি একে “চরম ভণ্ডামি” বলে অভিহিত করেন।

বিবিসি জানিয়েছে, রুশনারার জন্ম সিলেটে। সাত বছর বয়সে তিনি পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।