সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে শত শত বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
এতদিন ধরেই ধারণা ছিল এবং অর্থ বিশেষজ্ঞরা নানা ফোরামে তার উদ্যোগে লিপ্ত কোটি কোটি টাকার কথা তুলে ধরেছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক নতুন প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচারে ‘শেখ হাসিনার সাইট’ জড়িত” শিরোনামে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ওই তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

প্রতিবেদনে আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন—
এ বিশাল অর্থ কীভাবে বিদেশে চলে গেল এবং আদৌ তা ফেরত আনা সম্ভব হবে কি না।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে শেখ হাসিনার সরকার সরকারি চাকরিজীবী নিয়োগে কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া ছাত্রদের ওপর নির্মম দমননীতি শুরু করে। এর মধ্যেই আওয়ামী লীগ দলীয় নেতারা বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া বিনিয়োগ, আর বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন বাড়াতে থাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ঢাকার রাজপথে আন্দোলনকারী বিদেশি সাংবাদিক ও প্রতিরোধ দমনচিত্র দেখা যায়—যা হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনের সাম্য বহন করে। আন্দোলনের সমন্বয়ক রাফিয়া রহিমা ছদ্দি বলেন, প্রথম দিকে পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ হয়নি। তবে ১৪ জুলাই পুলিশের গুলিতে তিনজন ছাত্র নিহত হন। আরেকজন আন্দোলনকারী বলেন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি চোখের আলো হারিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৬৫ দিনব্যাপী ওই আন্দোলনে অন্তত ৬৪ হাজার মানুষ গ্রেফতার হন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য-প্রমাণ প্রকাশ করে।

সরকারি হিসেবে ওই আন্দোলনে ৩ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।
নিহতদের মধ্যে সাধারণ মানুষও ছিল। আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা বলেন, নিহতদের মধ্যে অনেকেই রাজনৈতিক ছিলেন না, বরং সাধারণ নাগরিক ছিলেন।