জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের কাঠামো চূড়ান্ত করেছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের এবং সদস্যরা জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে) মনোনীত হবেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ২৩তম দিনের আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানান, আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সনদ দ্রুত প্রস্তুত করে রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, উচ্চকক্ষের আইন প্রণয়নে ক্ষমতা সীমিত থাকবে। অর্থবিল ছাড়া অন্য সব বিল উচ্চকক্ষে উত্থাপন করা যাবে। তবে উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না। বিল এক মাসের বেশি আটকে রাখলে সেটি অনুমোদিত বলে গণ্য হবে। উচ্চকক্ষের কাজ হবে বিল পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে সুপারিশসহ তা নিম্নকক্ষে পাঠানো। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নিম্নকক্ষ।
তবে উচ্চকক্ষ গঠনের এই কাঠামোর বিরোধিতা করেছে বিএনপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম এবং এলডিপি। তারা ভোটের ভিত্তিতে নয়, বরং নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে সদস্য মনোনয়নের দাবি জানিয়েছে। অপরদিকে, সিপিবি, বাসদ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উচ্চকক্ষ ব্যবস্থারই বিরোধিতা করেছে।
আজকের আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠক পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।