হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস হলো মহররম, যার মাধ্যমে শুরু হয় ইসলামী নববর্ষ। এটি ইসলামের চার পবিত্র মাসের একটি এবং একে আল্লাহর মাস বলা হয়। এ মাসটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কেননা এই মাসে ঘটেছে বহু স্মরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
মহররমের ১০ তারিখকে বলা হয় আশুরা। ইসলামপূর্ব যুগ থেকেই আশুরা দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত হতো। ইসলামী ইতিহাসে এই দিনটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে, কারণ:
হজরত হোসাইন (রা.), রাসুল (সা.)-এর প্রিয় নাতি, ৬১ হিজরিতে কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদের বাহিনীর সঙ্গে এক অসম যুদ্ধে শহীদ হন।
একই দিন হজরত আব্বাস (রা.)-ও ফোরাত নদীর তীরে শাহাদাত বরণ করেন।
আশুরার দিনেই হজরত মূসা (আ.) তার অনুসারীদের নিয়ে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি পান।
হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা মহাপ্লাবনের পর জুদি পাহাড়ে অবতরণ করে।
১ মহররম: ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)-এর শাহাদাত দিবস।
২ মহররম: হজরত হোসাইন (রা.) কারবালায় পৌঁছে তাঁবু স্থাপন করেন।
৭ মহররম: হজরত হোসাইন (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৮ মহররম: হজরত হোসাইনের পুত্র হজরত জয়নুল আবেদীন (রা.)-এর শাহাদাত দিবস।
১০ মহররম (আশুরা): কারবালার হৃদয়বিদারক যুদ্ধ ও শাহাদাত সংঘটিত হয়।
২০ মহররম: ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বেলাল (রা.)-এর ইন্তেকাল।
মহররম মাসে রোজা রাখার রয়েছে বিশেষ ফজিলত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই মাসে বিশেষ করে ১০ তারিখে (আশুরা) রোজা রাখতেন এবং উৎসাহ দিতেন ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা রাখতে।
হাদিসে উল্লেখ রয়েছে:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “আমি আল্লাহর রাসুলকে রমজান ও আশুরার রোজাকে যেভাবে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতে দেখেছি, অন্য সময়ে তেমন দেখিনি।” — (সহিহ বোখারি: ১/২১৮)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, “রমজানের পর আল্লাহর মাস মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।” — (সহিহ মুসলিম: ২/৩৬৮)
মহররম মাস তাই শুধু হিজরি নববর্ষের সূচনাই নয়, বরং ইতিহাস, ত্যাগ, শিক্ষা ও আত্মশুদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ও বটে।
চেয়ারম্যানঃ এম এস চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালকঃ মোঃ এম রহমান, ঠিকানাঃ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত