
বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি, মেডিক্যাল ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা বাস্তবায়নের দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। মাজার গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষকরা মাজার গেটেই অবস্থান করছেন।
এর আগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
তিনি বলেন,
“২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা মেডিক্যাল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কোনও শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না।”
অধ্যক্ষ আজিজী জানান, গত ১৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা, সচিব ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু এখনও তা কার্যকর হয়নি।
তিনি বলেন,
“আমরা আলোচনার সব পথ শেষ করেছি। সিদ্ধান্ত হয়েও বাস্তবায়ন হয়নি। এখন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নতুন করে আলোচনার কিছু নেই— শুধু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন চাই।”
গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে পদযাত্রার সময় বিকেল ৪টা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অধ্যক্ষ আজিজী আরও বলেন,
“যদি শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে প্রেস ব্রিফিং করে জানায় যে দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন দুই-তিন দিনের মধ্যে দেওয়া হবে— তাহলে আমরা সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা স্থগিত করব। ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।”
তিনি দাবি করেন,
“এই আন্দোলনের সঙ্গে শুধু শিক্ষকরা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনও একাত্মতা জানিয়েছে। এখন এটি জাতীয় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।”
এর আগে গত রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
রবিবার ও সোমবার রাতভর খোলা আকাশের নিচে শহীদ মিনারে অবস্থান করেন শিক্ষকরা— কেউ চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার বালিশ বানিয়ে রাত কাটান।
তাদের ঘোষণা, প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।
এদিকে সারাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন না বা পাঠদান করছেন না। শিক্ষক লাউঞ্জ, অফিসকক্ষ ও বিদ্যালয়ের আঙিনায় বসে অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন।
এছাড়া বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদ করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকরা।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি
Leave a Reply