জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাগরিক সেবা সচল রাখতে এসব নির্বাচনের আয়োজন জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের জন্য এটি জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি ‘ট্রায়াল রান’-এর সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। খুব শিগগিরই সরকারের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘোষণা আসতে পারে।
তবে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে—এ নিয়ে এখনো রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি। বিএনপির মতো বড় দলগুলো আগে জাতীয় নির্বাচন চায়। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করে আসছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান মত দিয়েছেন, বিচ্ছিন্নভাবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন করা ঠিক হবে না। বরং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় দ্রুত সংস্কার করে তারপর নির্বাচন আয়োজন করাই হবে যৌক্তিক পদক্ষেপ। তার মতে, এই সংস্কারে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকার দুই সিটিসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা অনুপস্থিত থাকায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আইন সংশোধন করে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
পরবর্তীতে গত ১৯ আগস্ট ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে বিজয়ী হয়ে বিএনপির শাহাদাত হোসেন মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ৪০ দিনের আন্দোলনের পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন এখনো শপথ নিতে পারেননি।