টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম জানান, উজানের ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পানি আরও বাড়তে পারে। ইতোমধ্যেই রংপুরের নিম্নাঞ্চল ও চরগ্রাম তলিয়ে গেছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে তিস্তা ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকাল ৬টায় পানির সমতল ৫২.২২ মিটার, যা বিপৎসীমার ৫২.১৫ মিটারের ৭ সেন্টিমিটার ওপর। সকাল ৯টায় পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা ও লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামের নদীপারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নীলফামারীর ডিমলার, খগাখাড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও অন্যান্য ভাটি এলাকা তলিয়ে গেছে। বাসিন্দারা গবাদি পশু ও জরুরি জিনিসপত্র উঁচু স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। অনেক এলাকায় ফসলি জমি ও শাকসবজি ভেসে গেছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে তিস্তা সেতুর পশ্চিম দিকে সেতু রক্ষা বাঁধের ৯০০ মিটারের মধ্যে প্রায় ৬০ মিটার ব্লক ধসে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় রংপুর টু লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়ক ও তিন গ্রামের কয়েক শত পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি।
লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘উজানের বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে সড়ক ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দ্রুত বাঁধ সংস্কারের কাজ প্রয়োজন।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা ও ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীও সতর্ক অবস্থায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।