আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নারকেল দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর এই দিনে নারকেলের গুণাগুণ, ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে আয়োজন করা হয়। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নারকেল সম্প্রদায়, এশিয়ান প্যাসিফিক কোকোনাট কমিউনিটি (এপিসিসি) দ্বারা দিবসটি পালন করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে এপিসি এই দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ইন্ডিয়াসহ মোট ১৮টি দেশ এপিসি সংস্থার সদস্য। দিবসের মূল লক্ষ্য হলো নারকেল শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।
বিশেষ এই দিনে ডাব বা নারকেলের জলের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক—
১. ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখে: নারকেল জলে সাইটোকিন থাকে, যা গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-এজিং এজেন্ট। ডাবের জল পান করলে ত্বক হাইড্রেট থাকে, বলিরেখা ও ফাইন লাইন কমে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান থাকে। এছাড়া এটি রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
২. চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে: চুল ঝরার সমস্যা থাকলে ডাবের জল পান উপকারী। এতে উপস্থিত ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যামিনো অ্যাসিড চুলকে মজবুত করে, রক্ত পরিবহন উন্নত করে এবং স্ক্যাল্পকে উদ্দীপিত করে।
৩. হজম শক্তি উন্নত করে: ডাবের জল প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে সতেজ রাখে। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় পাচনতন্ত্রকে মজবুত করে এবং গ্যাস বা ব্লটিং কমাতে সাহায্য করে।
৪. ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে: ডাবের জল শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং হারানো পুষ্টি উপাদান পুনঃস্থাপন করে।
৫. হাড় মজবুত করে: নারকেলের জল হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এর ফলে অল্প বয়সে অস্টিওপোরোসিস, আর্থ্রাইটিস ও অস্টিওপেনিয়া ইত্যাদি হাড়ের রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
৬. অ্যাসিডিটি প্রতিরোধ করে: এটি শরীরের পিএইচ স্তর ভারসাম্য বজায় রাখে, অ্যাসিডিটি ও বুক জ্বালার সমস্যা কমায়।
৭. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: নিয়মিত ডাবের জল পান করলে রক্তে জমাট বাঁধার প্রবণতা কমে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে, ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নারকেল গাছের পাতা ও খোসা দিয়ে ফ্লোর ম্যাট, ব্যাগ, পাখা, ঝুড়ি, খেলার ঘর, পুতুল ইত্যাদি তৈরি করা যায়। নারকেলের আঁশ দিয়ে তৈরি ব্যাগ পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশ্বের অনেক দেশে নারকেল ব্যবসা প্রধান আয়ের উৎস হলেও বিশ্বব্যাপী নারকেলের চাহিদা এখনও কম। তাই নারকেল শিল্পের উন্নয়ন ধীরগতিতে হচ্ছে। এই দিবস পালনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয় এবং নারকেল শিল্পের উন্নয়নে প্রেরণা যোগানো হয়। চাহিদা বৃদ্ধি পেলে নারকেল নির্ভর মানুষের জীবনেও পরিবর্তন আসবে।