ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্টারলিংক প্রকল্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এবার বাংলাদেশেও আসছে এই স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা। বর্তমানে সরকারের অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে, এবং আগামী ৯ এপ্রিল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংক চালু হবে। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে এটি বাণিজ্যিকভাবে উন্মুক্ত হতে পারে।
স্টারলিংক একটি লো-অরবিট স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা, যা ভূ-স্থাপিত টাওয়ারের পরিবর্তে মহাকাশে থাকা হাজার হাজার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে। এর ফলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
২৫ ও ২৬ মার্চ ঢাকায় এক হোটেলে স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরীক্ষায় ডাউনলোড স্পিড ২৩০-৩০১ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ২০-২৫ এমবিপিএস পাওয়া গেছে। ল্যাটেন্সি ছিল ৫০-৫৩ মিলিসেকেন্ড, যা অনলাইন গেমিং ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য উপযুক্ত।
বাংলাদেশের চর, পাহাড় ও দুর্গম এলাকাগুলোতে এখনও ব্রডব্যান্ড সংযোগ পৌঁছায়নি। স্টারলিংক এসব এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি দেশের ডিজিটাল সংযোগকে আরও সম্প্রসারিত করবে।
গ্রাহকদের স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (starlink.com) গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। প্রি-অর্ডার নিশ্চিত হলে নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে স্যাটেলাইট কিট সংগ্রহ করতে হবে। সেটআপের পর, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সংযোগ সক্রিয় করতে হবে।
স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সেবাটি নিতে হলে প্রথমে স্যাটেলাইট ডিশ ও রাউটারসহ একটি কিট কিনতে হবে, যার সম্ভাব্য দাম ৬০,০০০-৭০,০০০ টাকা হতে পারে। এরপর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি ১২,০০০-১৭,০০০ টাকা হতে পারে।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) ইতোমধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা স্টারলিংকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিক সেবা চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের সময় স্টারলিংক বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও, বাণিজ্যিক পর্যায়ে এটি বাংলাদেশের স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে (আইআইজি) ব্যবহার করবে।