রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামুনশিকড় গ্রামে ঋণ ও অভাবের কারণে একই পরিবারের চারজনের আত্মহত্যার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন মিনারুল ইসলাম (পিতা), তাঁর স্ত্রী, বড় ছেলে মাহিন এবং ছোট মেয়ে মিথিলা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টার দিকে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। পরে দুপুরে পুলিশ গিয়ে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, মিনারুলকে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বড় ছেলে মাহিনকে বিছানায় মৃত অবস্থায় দেখা যায়। অন্য ঘরে বিছানায় শুয়ে ছিলেন মিনারুলের স্ত্রী ও ছোট মেয়ে মিথিলা।
ঘটনাস্থল থেকে একটি দুই পৃষ্ঠার চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে মিনারুল লিখেছেন, পরিবারসহ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। চিরকুটে উল্লেখ করা হয়, ঋণের বোঝা এবং অভাব-অনটনের কারণে তারা আত্মহত্যা করেছেন।
চিরকুটে আরও লেখা ছিল, “আমি মিনারুল। প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি, এরপর ছেলে মাহিন ও মেয়ে মিথিলাকে মেরেছি। সবশেষে আমি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছি। আমাদের মৃত্যুতে কারও কোনো দায় নেই। পুলিশ যেন কাউকে ফাঁসিয়ে টাকা না খায়।”
তিনি আরও লিখে গেছেন, “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। একা মরলে আমার স্ত্রী-সন্তানদের কষ্টে বাঁচতে হতো। তাই সবাইকে নিয়েই চলে যাচ্ছি।”
চিরকুটে মিনারুল তাঁর বাবার উদ্দেশে লিখেছেন, যেন তিনি তাঁদের জানাজায় কোনো খরচ না করেন এবং মরদেহগুলো বড় ছেলে ও তার পরিবারের সামনে না আনা হয়।
পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় চরম শোক ও হতবাকের সৃষ্টি করেছে।