বিশ্ববিখ্যাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক তাদের ভিডিও ফিচারে আনতে যাচ্ছে বড় ধরনের পরিবর্তন। প্রচলিত ‘ভিডিও’ সেকশন সরিয়ে শুধুমাত্র ‘রিলস’ ফরম্যাটে ভিডিও কনটেন্ট দেখার ও শেয়ার করার সুযোগ থাকবে ব্যবহারকারীদের জন্য। মেটার দাবি, এ পরিবর্তনের মাধ্যমে ফেসবুকের ভিডিও অভিজ্ঞতায় শুরু হবে এক নতুন যুগ।
বুধবার (১৮ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মেটার বরাতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ফেসবুক অ্যাপে আর আলাদা কোনো ভিডিও অপশন থাকবে না। ব্যবহারকারীদের আপলোড করা সব নতুন ভিডিও ‘রিলস’ হিসেবেই প্রকাশিত হবে। যদিও এই রিলসে সময়সীমার নির্দিষ্ট কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
মেটা জানিয়েছে, খুব শিগগিরই ফেসবুকে বিদ্যমান ভিডিও ট্যাব সরিয়ে একটি ‘রিলস-নির্ভর ভিডিও হাব’ চালু করা হবে। সেখানে থাকবে শুধুমাত্র ছোট দৈর্ঘ্যের, মোবাইল-ফ্রেন্ডলি, স্ক্রলযোগ্য ভিডিও। ব্যবহারকারীরা এখান থেকেই রিলস তৈরি, সম্পাদনা এবং শেয়ার করতে পারবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সংক্ষিপ্ত ভিডিওর প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। টিকটকের সফলতা দেখে ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবের মতো ফেসবুকও এখন এই ফরম্যাটে জোর দিচ্ছে। অধিকাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারী মোবাইল থেকে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেন এবং তারা দ্রুত, ছোট ও বিনোদনমূলক ভিডিও উপভোগ করেন, যা রিলসের মাধ্যমে সহজেই পৌঁছানো যায়।
এছাড়া, রিলস পোস্টগুলো সাধারণত বেশি এনগেজমেন্ট তৈরি করে। ফলে ব্যবহারকারীরা বেশি সময় ফেসবুকে থাকেন এবং নতুন কনটেন্ট তৈরি করতে উৎসাহ পান—এটাই মেটার প্রধান লক্ষ্য।
ভিডিও কনটেন্ট নির্মাতারা: যারা দীর্ঘ ভিডিও প্রকাশ করতেন, তাদের এখন রিলস ফরম্যাটে কনটেন্ট মানিয়ে নিতে হবে।
বিজনেস ও মার্কেটাররা: বিজ্ঞাপন বা ব্র্যান্ড প্রচারে কৌশল পরিবর্তন করতে হবে।
সাধারণ ব্যবহারকারীরা: ভিডিও ট্যাব না থাকলেও, রিলস ফরম্যাটে ধীরে ধীরে সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন বলে ধারণা।
মেটার একজন মুখপাত্র বলেন, “আমরা চাই আমাদের প্ল্যাটফর্ম আরও সহজ, দ্রুত ও আকর্ষণীয় হোক। এজন্য ভিডিও অভিজ্ঞতা সরলীকরণ করছি। রিলস হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন ফেসবুককে আরও বেশি টিকটক বা ইনস্টাগ্রামের মতো করে তুলবে। কেউ কেউ এটিকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ বললেও, অনেকেই বলছেন এতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে পার্থক্য ক্রমেই ঘুচে যাচ্ছে।
মেটা জানিয়েছে, এই পরিবর্তন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে বিশ্বজুড়ে সকল প্রোফাইল ও পেজে কার্যকর করা হবে।
ডিজিটাল জগতে টিকে থাকতে হলে ধারাবাহিক পরিবর্তনই হচ্ছে মূল চাবিকাঠি—এ কথা আরও একবার প্রমাণ করলো ফেসবুক।