ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটি বহাল থাকবে এবং প্রত্যেক হল প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়ে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসও দেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে ঢাবির ১৮টি আবাসিক হলে ৫৯৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এসব কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনেক সাবেক নেতা–কর্মী পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পছন্দের কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল তদন্ত কমিটি গঠন করে। নতুন কমিটিতে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্যের ঘোষণায় অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে—২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের কমিটি বিলুপ্ত করা, হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া, একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা এবং দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন।

শুক্রবার রাত ১২টার দিকে শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুহসীন হল, বিজয় ৭১ হল, এ এফ রহমান হলসহ বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন। রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা গেটের তালা ভেঙে বের হয়ে এসে একই দাবিতে স্লোগান দেন—‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, হল পলিটিক্স নো মোর’।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি ছিল হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আমরা আবারও পুরনো ধারায় ফিরে গেছি।” শিক্ষার্থীরা সতর্ক করে বলেন, দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রকাশ্য, গোপন বা সুপ্ত—কোনো ধরনের হলপলিটিক্সই বরদাশত করা হবে না।