1. live@media71bd.com : Media71 : Media71
  2. info@www.media71bd.com : Media 71 :
রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০১:২৪ অপরাহ্ন

কেয়ামতের পূর্বলক্ষণ: ইমাম মাহদির আগমন

ইসলামিক ডেস্ক
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

পৃথিবীতে কেয়ামত হবে—এটি চিরন্তন সত্য। তবে এর সঠিক সময় কেবল আল্লাহই জানেন। নবী-রাসুল বা ফেরেশতাদেরও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কোরআন ও হাদিসে কেয়ামতের আগে বেশ কিছু আলামতের কথা এসেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ইমাম মাহদির আগমন।

ইমাম মাহদির পরিচয়

ইমাম মাহদির নাম মুহাম্মাদ, পিতার নাম আবদুল্লাহ। “মাহদি” অর্থ ন্যায়নিষ্ঠ, সুপথপ্রাপ্ত ও প্রতিশ্রুত। তিনি পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন, শান্তি ফিরিয়ে আনবেন এবং জুলুম-অত্যাচার দূর করবেন। নবীজি (সা.)-এর বংশধর তিনি—পিতার দিক থেকে হাসান (রা.) ও মাতার দিক থেকে হুসাইন (রা.)-এর বংশ থেকে আসবেন। হাদিসে বর্ণিত, ইসা (আ.) তাঁর ইমামতিতে নামাজ আদায় করবেন। ইমাম মাহদি নবী নন, তবে হবেন মুসলমানদের নেতা।

জন্ম ও আত্মপ্রকাশ

কোরআন-হাদিসে তাঁর জন্মসাল বা ইতিমধ্যেই জন্মগ্রহণ করেছেন কি না, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু নেই। কেউ কেউ মনে করেন তাঁর জন্ম মদিনায় হবে, আবার কেউ কুফাকে সম্ভাব্য জন্মস্থান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অনেক আলেমের মতে, তিনি মদিনা থেকে আত্মপ্রকাশ করে মক্কায় আসবেন এবং সেখানেই কিছু মানুষ তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবেন। পরে আরবের জালেম শাসকদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে মুসলমানদের নেতা হবেন।

শারীরিক বর্ণনা

হাদিস অনুযায়ী, ইমাম মাহদি মধ্যম উচ্চতার, সুন্দর গড়নের হবেন। কপাল হবে প্রশস্ত ও দীপ্তিময়, চোখ হবে ডাগর, নাক হবে লম্বা ও খাঁড়া, চেহারা হবে উজ্জ্বল তারকার মতো এবং ডান গালে থাকবে একটি তিল। তিনি সাত বছর (বা কিছু বর্ণনায় আট বা নয় বছর) ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে শাসন করবেন।

আগমনের প্রেক্ষাপট

তাঁর আগমনের আগে পৃথিবীতে অন্যায়-অবিচার, জুলুম, হত্যা, দুঃশাসন ও ব্যভিচার বেড়ে যাবে। সত্যের চেয়ে মিথ্যা প্রাধান্য পাবে, দুর্বল ও নারীদের জন্য পৃথিবী হয়ে উঠবে ভয়ঙ্কর। বড় বড় জাতি যুদ্ধ ও সংঘাতে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। ঠিক তখনই ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় আগমন করবেন ইমাম মাহদি।

শাসনামলের বরকত

তাঁর শাসনামলে আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি হবে, জমিনে ফসল উৎপাদন বাড়বে, গৃহপালিত পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সম্পদ সমানভাবে বণ্টন হবে। মুসলমানদের মর্যাদা বাড়বে।

হত্যাযজ্ঞ ও ফেতনা

ইমাম মাহদির আগমনের আগে পৃথিবীতে নিরাপরাধ মানুষ হত্যার ফেতনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। আলি (রা.)-এর বর্ণনায়, সে সময়ে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ হত্যা হবে, এক-তৃতীয়াংশ মারা যাবে এবং এক-তৃতীয়াংশ মানুষ জীবিত থাকবে।

কেয়ামতের আগে আগমন

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর শেষ প্রান্তে যদি একটি মাত্র দিনও অবশিষ্ট থাকে, আল্লাহ তা দীর্ঘ করবেন যাতে তাঁর পরিবার থেকে একজন (ইমাম মাহদি) আসতে পারেন, যার নাম ও পিতার নাম হবে নবীজির (সা.) নাম ও পিতার নামের অনুরূপ।

ইসা (আ.)-এর অবতরণ

ইমাম মাহদির সময়ে ইসা (আ.) পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং তাঁর পেছনে ফজরের নামাজ আদায় করবেন। পরে তাঁরা একসঙ্গে দাজ্জালের মোকাবিলা করবেন। দাজ্জালকে হত্যায় ইমাম মাহদি ইসা (আ.)-কে সহযোগিতা করবেন।

ফিলিস্তিনে অবস্থান

রাজত্বের শেষদিকে ইমাম মাহদি মুসলমানদের নিয়ে মসজিদুল আকসায় অবস্থান করবেন। বাইরে দাজ্জাল ইহুদিদের সঙ্গে মিলে মুসলমানদের অবরুদ্ধ করবে। এ সময় ইসা (আ.) দামেস্কে অবতরণ করে ফিলিস্তিনে এসে মুমিনদের রক্ষা করবেন।

নবীজির (সা.) নির্দেশনা

হাদিসে মুসলমানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ইমাম মাহদির আগমনের সময় উপস্থিত থাকলে তাঁর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করতে—যদিও বরফের পাহাড় হামাগুড়ি দিয়ে অতিক্রম করতে হয়।

রাজত্বকাল

হাদিস ও আলেমদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ইমাম মাহদি সাত, আট বা নয় বছর রাজত্ব করবেন। এ সময়েই কেয়ামতের অন্যান্য বড় আলামত প্রকাশিত হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!