শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। রোববার (১৮ মে) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই এডিপি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এনইসি সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অর্থায়নের ধরণ
নতুন এডিপির মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন করা হবে।
বাজেটের আকার ও খাতভিত্তিক বরাদ্দ
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধন করে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরের এডিপি মূল বাজেটের তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম হলেও সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বেশি।
এডিপিতে মোট ২ লাখ ১৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা ১ হাজার ১৪২টি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাত সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২৫.৬৪ শতাংশ বা ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।
অন্য প্রধান খাতগুলোর বরাদ্দ:
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: ১৪.০৮% বা ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা
শিক্ষা: ১২.৪২% বা ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা
গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা: ৯.৯০% বা ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা
স্বাস্থ্য: ৭.৮৯% বা ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাতের মধ্যে রয়েছে:
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন: ১৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা
কৃষি: ১০ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা
পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ: ১০ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা
শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা: ৫ হাজার ৩৮ কোটি টাকা
বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি: ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা
ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদন: ৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা
জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা: ২ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা
সামাজিক সুরক্ষা: ২ হাজার ১৮ কোটি টাকা
সাধারণ সরকারি সেবা: ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা
প্রতিরক্ষা: ৪৭৫ কোটি টাকা
বাজেট সংকোচন ও ঘাটতি মোকাবিলা
সরকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে এ বছর এডিপির আকার কিছুটা সংকুচিত করেছে। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে সরকারি অর্থায়ন ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা আগামী অর্থবছরে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রাও ১ লাখ কোটি টাকা থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকায় কমানো হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট চাহিদা ছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা, যা চূড়ান্ত এডিপি বরাদ্দের চেয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা বেশি। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার এবং কর্মক্ষমতা বিবেচনায় প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
