
মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে বরিশালের নলছিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য জানায়। মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিনও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে এবং গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে এই জোড়া হত্যাকাণ্ডে গৃহকর্মী আয়েশাকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তদন্তসূত্র জানিয়েছে, আয়েশাকে জিজ্ঞাসাবাদেই হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যেতে পারে। গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলার ফ্ল্যাট থেকে লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়ার (১৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই রাতে নিহত লায়লার স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, সকাল ৭টার দিকে তিনি স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। পরে স্ত্রীকে ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে ফিরে এসে দেখেন, তাদের দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বাসা থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও আরও কিছু মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়েছে।
ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আয়েশা সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে ব্যাগ হাতে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। চার দিন আগে ‘আয়েশা’ পরিচয়ে কাজ নেওয়া প্রায় ২০ বছর বয়সী এই তরুণীর আসল পরিচয় গোপন ছিল। বাসায় যোগ দেওয়ার সময় তার কাছে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। পরে যে ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যান, সেটি বাসা থেকে বের হয়েই বন্ধ করেন। আশপাশের বেশির ভাগ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল থাকায় তাকে শনাক্ত করতে ম্যানুয়ালভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়েছে।
সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি এবং মেয়ের শরীরে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। এখন পর্যন্ত হত্যার কারণ স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মা ও মেয়ের মরদেহ নাটোরের দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয় এবং জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি
Leave a Reply