কোরবানির দিন—বছরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“আল্লাহর কাছে দিবসসমূহের মাঝে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কোরবানির দিন। এরপর এর পরের তিন দিন।” (আবু দাউদ : ১৭৬৫)
এই মর্যাদাপূর্ণ দিনে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর জানা উচিত। নিচে সেগুলো সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো:
১. গোসল করা
ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করা সুন্নত। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করতেন।” (মুয়াত্তা ইমাম মালেক)
২. ভালো পোশাক পরা
ঈদের দিন পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পোশাক পরা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের দিন তাঁর লাল-সবুজ ডোরার চাদর পরতেন।
৩. সুগন্ধি ব্যবহার
সুগন্ধি ব্যবহার করা নবিজির পছন্দনীয় আমল। ঈদের দিন বিশেষভাবে সুগন্ধি ব্যবহার করতেন তিনি। (তিরমিজি : ১০৮০)
৪. ঈদের দিনে খাওয়া
কোরবানির ঈদে নামাজের আগে না খাওয়া মুস্তাহাব। নামাজের পর কোরবানির গোশত খেয়ে ঈদের আহার শুরু করা সুন্নত। (তিরমিজি : ৫৪৫)
৫. ঈদগাহে যাওয়া ও ফেরার ভিন্নপথ ব্যবহার
রাসুল (সা.) ঈদগাহে একপথ দিয়ে যেতেন এবং অন্যপথ দিয়ে ফিরতেন। (বোখারি : ৯৮৬)
৬. হেঁটে যাওয়া (সম্ভব হলে)
যাদের পক্ষে সম্ভব, তাদের জন্য হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। (ইবনে মাজাহ : ১০৭১)
৭. তাকবির পাঠ
জিলহজের ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করা সুন্নত।
পুরুষরা উচ্চ আওয়াজে এবং নারীরা নীরবে পড়বে। (ফাতহুল বারি : ২/৫৮৯)
৮. ঈদের নামাজ আদায়
ঈদের নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এতে রয়েছে অপার সওয়াব ও ফজিলত।
৯. শুভেচ্ছা বিনিময়
পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বলা যায়:
“তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম”
(বাংলা অর্থ: আল্লাহ আমাদের এবং আপনার পক্ষ থেকে কবুল করুন)। (বায়হাকি : ৩/৪৪৬)
১০. কোরবানি করা
সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। (সুরা কাউসার : ১-২)
১. কোরবানির কোনো কিছু বিক্রি করা
কোরবানির গোশত, চামড়া বা যেকোনো অংশ বিক্রি করা নিষিদ্ধ। (বোখারি : ১৭১৭)
২. ঈদের দিনে রোজা রাখা
ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখা হারাম। রাসুল (সা.) দুই ঈদের দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)
৩. ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা
ঈদের দিন কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট মনে করে যাওয়া ঠিক নয়। তবে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ কারও একাকী যাওয়া দোষণীয় নয়। (ফিকহুস সুন্নাহ : ১/৬৬৯)
৪. কোলাকুলি ও মুসাফাহাকে আবশ্যক মনে করা
ঈদের দিন মুসাফাহা বা কোলাকুলি করতে হবে—এমন ধারণা ঠিক নয়। এটি আবশ্যক কোনো আমল নয়।